Wednesday, October 6, 2010

২০ সেপ্টেম্বর ২০১০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জন বিশেষ করে শিশু মৃত্যু হার হ্রাসে বাংলাদেশের বিশেষ কৃতিত্বের জন্য গতকাল জাতিসংঘ পদক গ্রহণ করেছেন। নিউইয়র্কের এস্টোরিয়া হোটেলে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশেষ করে শিশু মৃত্যুহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমাদের কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে শেখ হাসিনা দেশের পক্ষে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।’ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনের পাশাপাশি উচ্চপর্যায়ের এমডিজি সম্মেলনের একদিন আগে বাংলাদেশ ও আরো ৫টি দেশকে এ পদক প্রদান করা হয়। পুরস্কার প্রদান কমিটি এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জন প্রচেষ্টায় শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পুরস্কার গ্রহণের পর এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ পুরষ্কার আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। কারণ সাম্প্রতিক বিশ্ব মন্দা, বিশ্ব উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও ২০১৫ সাল নাগাদ এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জন প্রচেষ্টায় আমরা কোন রকম ছাড় দেইনি।’ ২০০০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে ৮ দফা এমডিজি নির্ধারণের দশ বছর পর এই পুরস্কার প্রদান করা হল। ওই অধিবেশনেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা অংশ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের শ্রদ্ধেয় নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমি বরাবরই হৃদয়ের গভীর থেকে শিশুদের কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করি। রবি ঠাকুর বলেছিলেন, ‘যতোবার একটি শিশু জন্ম নেয়, ততোবার নতুন করে আমার ভেতর এ বিশ্বাস জন্মে ঈশ্বর মানুষকে ছেড়ে যাননি।’ কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সমর্থনই এ পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্য। কারণ জাতিসংঘ এমডিজি অর্জনে সদস্য দেশগুলোর জন্য ১৫ বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল।



১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১০
সরকার সঠিক পথে রয়েছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রেসিডিয়ামের তৃতীয় বৈঠকে এ অভিমত প্রকাশ করেন সদস্যরা। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেসিডিয়াম বৈঠকের মূল্যায়ন তুলে ধরেন দলের মুখপাত্র ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্যরা জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। একইসঙ্গে গেল রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল, আইন-শৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। দুঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ সংসদীয় কমিটিতে যোগ দেওয়ার জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, বিরোধী দল ওই কমিটিতে যোগ দিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরতে পারে। আওয়ামী লীগ সব দলের মতামত ও ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েই সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত প্রস্তাব সংসদে পেশ করতে চায়। বৈঠকে বিরোধী দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, বিরোধী দল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ঠেকাতেই আন্দোলনের কথা বলছে। তারা গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে একই সঙ্গে বিরোধী দলকে সংসদে এসে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, আন্দোলন বিরোধী দলের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত বৈধ সরকারকে মেয়াদ শেষের এক দিন আগেও উৎখাতের কথা বলা অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক। পাঁচ বছর পর নির্বাচনের মাধ্যমেই তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে হবে।



১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর এক সভা আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ২০১০ সন্ধ্যা ৭টায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি’র সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এমপি।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সকল সম্মানিত সদস্যকে উক্ত সভায় যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি অনুরোধ জানিয়েছেন।



০৯ সেপ্টেম্বর ২০১০
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলকে শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানিয়ে তার বাণীতে বলেছেন, ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়; সাম্য, মৈত্রী ও সমপ্রীতির বন্ধনে একইসূত্রে গ্রথিত করে সকল মানুষকে। ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সর্বড়্গেত্রে ঈদুল ফিতরের শিক্ষা ও মর্মবাণীর প্রতিফলন ঘটাতে আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাই। ধনী-গরীব নির্বিশেষে ঈদ সকলের জীবনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসুক এই কামনা করছি। তিনি তার বাণীতে পবিত্র এ দিনে মহান আলস্নাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্বের উত্তরোত্তর উন্নতি, অব্যাহত শানিত্ম ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।



০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০
বেশ কয়েকদিন ধরে বিএনপির কতিপয় নেতা নানা ধরণের অসত্য, অশোভন, বিষোদগার ও মনগড়া বক্তব্য দিয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান- করার এক ব্যর্থ অপচেষ্টা চালানোর পাঁয়তারা করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মহাজোট সরকার যখন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের রেখে যাওয়া পাহাড় সমান সমস্যা ও সংকট নিরবচ্ছিন্নভাবে সমাধানের চেষ্টা করছে সেই সময় এ ধরণের বক্তব্য বিএনপি নেতৃত্বের চরম হতাশা ও রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বেরই প্রমাণ বহন করছে। গত জোট সরকারের আমলে খালেদা জিয়া ও তার পরিবার বাংলাদেশে যে সন্ত্রাসের রাজত্বকাল প্রতিষ্ঠা করেছিল তা দেশ-বিদেশে সকলেরই জানা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে খালেদার এই শাসনামলকে সীমাহীন দুর্নীতি, জাতীয় সম্পদের লুণ্ঠন, হত্যা-নির্যাতন ও সন্ত্রাসী জঙ্গি রাষ্ট্র সৃষ্টির এক অন্ধকার সময় হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল।ওই সময় ফার ইস্টার্ন ইকনোমিক রিভিউ, বিশ্বখ্যাত সংবাদ সাময়িকী টাইম, নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ পৃথিবীর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এমনকি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টেও তাদের অপশাসন, দুঃশাসনের ভয়াবহ চিত্রের বর্ণনা এখনো এদেশের জনগণ ভুলে যায়নি। বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার ও তার সহযোগিরা সেই দুঃসহ ভয়াবহ দুঃশাসনের স্মৃতিকে ঢেকে ফেলার ব্যর্থ অপচেষ্টার অংশ হিসেবেই এ ধরণের বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ ও কিছুটা বিকারগ্রস- বক্তব্য জনগণের সামনে হাজির করার চেষ্টা করছে। জোট সরকারের আমলে খালেদা জিয়া ও তার পরিবার বিশেষ করে খালেদা জিয়ার দুই পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রযন্ত্রের যথেচ্ছা ব্যবহারের কথা এদেশের মানুষ কখনো ভুলে যায়নি, কখনো ভুলবে না। বিশ্বের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে তারেক রহমানের দুবাই বৈঠকে এই মাফিয়া ডনের সহযোগিতায় দুবাইয়ে কোটি কোটি ডলার দিয়ে বিশাল অট্টালিকা কেনার কথা ২০০৭ সালে ঢাকার একটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। জনশ্রুতি রয়েছে দাউদ ইব্রাহীমের মেয়ের বিয়েতে বহু মূল্যে ডায়মন্ড উপহার দিয়ে তারেক রহমান মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে এসেছিলেন। অস্ত্র চোরাচালানির একটি ডিলের কথাও প্রচারিত রয়েছে। খালেদা জিয়ার এই ‘কীর্তিমান’ পুত্র মানি লন্ডারিং-এর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছিলেন। উল্লেখ্য, মানি লন্ডারিং-এর অভিযোগে আমেরিকান ফেডারেল কোর্ট এ সংক্রান- একটি রায়ও দিয়েছে। বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান সিমেনস্-এর কাছ থেকে খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক-কোকো যে বিপুল অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন এ ঘটনাটিও ওই সময় আন-র্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচিত হয়েছিল।
বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার কয়েক মাস আগে সৌদি আরবে ১৮৫টি লাগেজ নিয়েছিলেন। এ খবরটিও ওই সময় দেশের পত্র-পত্রিকায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। প্রশ্ন- এই ১৮৫টি লাগেজের ভিতরে কি ধন-সম্পদ তারা বিদেশে পাচার করেছিল? গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এক তদনে- খালেদা জিয়ার পরিবারের নামে ন্যূনতম ১০টি এফডিআরের তথ্য পাওয়া যায়। এ সময় জরিমানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা তারা সাদা করেছিল ঘটনাটি দেশবাসীর অজানা নয়।

বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের দুর্নীতির খতিয়ান সংক্ষিপ্ত এই সাংবাদিক সম্মেলনে দেয়া সম্ভব নয়। তবুও আরো কয়েকটি দুর্নীতির খণ্ডচিত্র তুলে না ধরে পারছি না। ক্যান্টনমেন্টের বিশাল বিলাসবহুল বাড়ি নিয়েই তারা ক্ষান- হয়নি। গুলশানের সুরম্য বাড়ি, নোয়াখালী ও কক্সবাজারে নামে-বেনামে শত শত একর জমি, বনানীতে প্লটসহ অগণিত ফ্যাক্টরি, শিল্প প্রতিষ্ঠান নিশ্চয়ই জেনারেল জিয়ার ছেঁড়া গেঞ্জি ও ভাঙা স্যুটকেস থেকে বেরিয়ে আসেনি। খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের এই সীমাহীন দুর্নীতি ও জাতীয় সম্পদের লুণ্ঠনের তথ্য যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এক এক করে বেরিয়ে আসতে থাকে, তখন তারেক এ থেকে বাঁচার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা-দাসখত দিয়ে রাজনীতি করবেন না মর্মে স্বীকারোক্তি দিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। জনশ্রুতি রয়েছে লন্ডনেও তার বিলাসবহুল বাড়ি ও একাধিক রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া ও তার দুর্নীতিবাজ পুত্রদ্বয়কে রক্ষার জন্য বিএনপিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের মধ্যে বিভ্রানি- সৃষ্টির সুযোগ খুঁজছে। তারা বলছেন, আরাফাত রহমান কোকো ব্যাংককে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অথচ আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে যে কোকো প্যারোলের অপব্যবহারের মাধ্যমে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। 


No comments:

Post a Comment