Wednesday, October 6, 2010



৪ অক্টোবর ২০১০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের জন্য কল্যাণমুখী সমাজ গঠন ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার প্রয়োজনীয় আইন ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং পর্যাপ্ত সম্পদ বরাদ্দ করতে দেশের জনগণ ও জাতিসংঘের কাছে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। আজ সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১০-এর উদ্বোধন করেন তিনি। এ উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিশুর জন্য আলোকিত নিরাপদ স্বদেশ চাই। ভবিষ্যত প্রজন্মের সুন্দর আগামীর জন্য আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করার জন্য তিনি উদাত্ত আহবান জানান। শিশু শ্রম বন্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সকল খাত থেকে শিশু শ্রম বিলোপ করা হবে। ইতোমধ্যেই শহরাঞ্চলের কর্মজীবী শিশুদের জন্য কর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। শিশুদের যাতে কোনভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার না করা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের শিশু অধিকার ঘোষণা অনুযায়ী শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে। অতীতে এ দেশের অনেক শিশুর রাজনৈতিক নির্যাতন ও সন্ত্রাসের শিকার হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার অপরাধে বাবা-মার সামনে রজুফা, মহিমা, ফাহিমা ও শেফালির মতো শত শত কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এ জন্য অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। ঢাকায় বাবার কোলে শিশু নওশীনকে বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছিল। তিনি বলেন, আমরা সেই অন্ধকার সময়ের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। শিশুদের জাতির সবচাইতে বড় সম্পদ বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, তাদের বেড়ে ওঠার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে আগামী দিনে দেশও জাতির কল্যাণে তারা আত্মনিয়োগ করবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালের মধ্যে শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইনশায়াল্লাহ, ২০১৪ সালের মধ্যে আমরা দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করা। স্কুল থেকে ঝরে পড়ার প্রবণতা বন্ধে সরকারের কর্মসূচিতে তিনি দেশে সকল সামর্থবান মানুষ ও ইউনিসেফের সহায়তা কামনা করেন। তিনি শিশুদের সাথে বন্ধুর মত আচরণ করার আহবান জানান ও তাদের শারীরিক ও মানসিক পরিচর্যার ওপর গুরুত্ব দেন। প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুরাও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে মানবসম্পদে পরিণত করা সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর শিশুদের প্রতি পরম ভালোবাসাকে স্মরণ করে তাঁর জন্মদিন ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশু অধিকার ও তাদের উন্নয়ন নিয়ে ভেবেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন ভাবনা থেকে দুস্থ, এতিম, আশ্রয়হীন ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণ ও অধিকার সংরক্ষণের জন্য ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণীত হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জাতীয় শিশু নীতি-২০১০-এর খসড়া প্রকাশ করেছে। এই নীতি চূড়ান্ত করার আগে তিনি সমাজের শ্রেণী ও পেশার মানুষের মতামত প্রত্যাশা করেন। শিশু অধিকার সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শারীরিক শাস্তি বন্ধ হলে বাড়বে শিশু বুদ্ধি বলে’-কে তিনি অত্যন্ত সমায়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন। দেশের শিশু ও নারী পাচার রোধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সামাজিক ব্যাধি রোধে তিনি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সর্বতো সহায়তা কামনা করেন। দশ বছরের নিষ্পাপ শিশু রাসেলের মত আর কোন শিশু যেন নিষ্ঠুরতার শিকার না হয় এ কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের ১৮ সদস্যের সাথে শিশু রাসেলের নির্মম হত্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পরবর্তীতে স্বৈরশাসক জিয়া ক্ষমতায় এসে আইন করে শিশু রাসেল হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করেছিল।



৪ অক্টোবর ২০১০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান এবং নারীর প্রতি সহিসংতা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা গ্রহণের জন্য দক্ষিণ এশীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় নারী অধিকার ইস্যুতে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সমস্যাগুলোও প্রায় অভিন্ন। তাই এর সমাধানে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।’ গতকাল সকালে হোটেল শেরাটনে নারী অধিকার সংক্রান্ত ৭ম দক্ষিণ এশীয় মন্ত্রী পর্যায়ের আঞ্চলিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। দক্ষিণ এশিয়ায় নারী ও শিশু পাচারকে বড়ো সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সামাজিক এ সমস্যা প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি এ অঞ্চলে নারী ও শিশুর ওপর রাজনৈতিক সহিসংতার বিষয়টিও তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর অনেক নারী ও শিশু রাাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিল। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নারীর অধিকার বাস্তবায়ন এবং তাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। এছাড়া নারী উন্নয়ন নীতিকে আরও যুগোপযোগী করে নারী অধিকার সংরক্ষণের লক্ষে কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিদ্যমান বিভিন্ন আইন সংশোধনসহ বেশ কিছু আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় জীবনের সকল স্তরে নারীর প্রতি সব ধরণের বৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করা সরকারের উন্নয়ন নীতির অংশ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে সামনে রেখে দারিদ্র্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বেইজিং প্লাটফরম ফর এ্যাকশনের আলোকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, রাজনীতি ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান ও পাঠ্যপুস্তক কেনার জন্য আর্থিক সহায়তাসহ নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর সরকারের নেয়া বিভিন্ন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ব্যবস্থার ফলশ্র“তিতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষার হার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়া শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘের এমডিজি-৪ পুরস্কার অর্জন করেছে। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এলক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে সারাদেশে ৯ লাখ ২০ হাজার বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা মহিলাকে ভাতা প্রদানের জন্য ৩৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামীতে এর আওতা ও অর্থের পরিমাণ আরো বাড়বে। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলদেশ বিশ্বে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ১৯ জন মহিলা প্রার্থী সরাসরি এবং ৪৫ জন সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা ও বিরোধী দলীয় নেতা নারী। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ৫টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও রয়েছেন নারী। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ১৪ হাজার ২২৮ জন নারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নারী নির্যাতন বন্ধে বিদ্যমান কিছু আইন সংশোধনীসহ অনেক আইন প্রণয়ন করেছে।



৩ অক্টোবর ২০১০
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে। এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গতকাল রাতে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভার শুরুতেই জাতিসংঘ সফর সফল এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে সাফল্যের জন্য জাতিসংঘ পুরস্কার গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়। সভায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া, সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনী বাতিল বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। সৈয়দ আশরাফ জানান, আগামী ৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিনের মধ্যেই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করবেন। বৈঠকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সরকারের সাফল্যসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সংবিধান সংশোধন কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অর্থনৈতিক বিষয় জিডিপি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সমর্থ হওয়া, স্বর্ণের রিজার্ভ বাড়া এবং এনার্জি খাতে বিনিয়োগ বাড়ায় সভায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, এ সভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা বলেন, নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নই সরকারের মূল দায়িত্ব।
সভায় নতুন ৪ জনকে দলের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরা হলেন: চৌধুরী অধ্যাপক খলিকুজ্জামান, ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক দুর্গা দাস ভট্টাচার্য ও ড. হামিদা বানু।



০১ অক্টোবর ২০১০
আগামীকাল শনিবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সন্ধ্যা ৭টায় এ বৈঠক শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সব সদস্যকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।



২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী, সামাজিক উন্নয়ন ও জাতিসংঘ নির্ধারিত এমডিজি লক্ষ্য-৪ অর্জনে ভূমিকা ও দৃঢ় নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনি গণতন্ত্রের প্রবক্তা। আপনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও জনগণের কল্যাণে অঙ্গীকার বাংলাদেশে জাতিসংঘ নির্ধারিত সকল সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) শিগগিরই অর্জনে সহায়ক হবে।’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিকেলে এখানে জাতিসংঘ ভবনে বান কি-মুনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হলে তিনি এ কথা বলেন। নিউজ উইক, বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া) তাঁর সাক্ষাতকার নেয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বৈঠকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য কোপেনহেগেনে গত কোপা-১৫ সম্মেলন ও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন বান কি-মুন। এমডিজি লক্ষ্য-৪ অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের এমডিজি পুরস্কার লাভ করায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ তাঁর বিচক্ষণ নেতৃত্বে ভবিষ্যতে অবশিষ্ট লক্ষ্যগুলো অর্জনে সক্ষম হবে। এ ছাড়া বান কি-মুন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের উন্নয়ন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় জাতিসংঘের সমর্থনের আশ্বাস দেন। বৈঠকে শেখ হাসিনা জাতিসংঘকে আরো গতিশীল ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ক্ষেত্রে আন্তরিক ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যার মাধ্যমে আপনার নতুন ও উদ্ভাবনী ধ্যান-ধারণার প্রতিফলন ঘটেছে।’ সৈন্য পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দেশ হিসেবে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগের (ডিপিকেও) নীতিনির্ধারণ ও প্রশাসনিক সংস্থায় নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যু হার কমানোর স্বীকৃতি হিসেবে এমডিজি পুরস্কার অর্জন প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবকে অবহিত করেন যে, বাংলাদেশ শিগগিরই অন্তত তিনটি এমডিজি অর্জনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত মাঝারি আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সরকার অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একটি দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া ও সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ নিজস্ব সম্পদের সাহায্যে একটি তহবিল গড়ে তুলেছে। কারণ বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে অসহায় দেশগুলোর একটি।

1 comment: