Tuesday, August 31, 2010

মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছি তা বাসত্মবায়ন করতে চাই : 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মরহুম জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের 
পুরস্কৃত করেছেন এবং বেগম খালেদা জিয়া তাদেরকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছেন।

৩১ আগস্ট ২০১০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মরহুম জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কৃত করেছেন এবং বেগম খালেদা জিয়া তাদেরকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া প্রথমেই বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনে চাকরি দেন। পরে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রম্নয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়ে পুনর্বাসিত করেছেন। ‘সামনে কঠিন সময়’ উলেস্ন্লখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তিনি সেই স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরাও মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছি তা বাসত্মবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পনেরই আগস্ট শুধু জাতির জনককেই হত্যা করা হয়নি, সেই সঙ্গে দেশের অগ্রগতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাংলাদেশের ধারাবাহিকতাকেও ধ্বংস করা হয়েছিল। ‘বাঙালি জাতির বিজয় যারা মেনে নিতে পারেনি তারাই পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল’ উলেস্ন্লখ করে তিনি বলেন, ড়্গমতা দখলের পরই তারা নানা অপপ্রচার করে মানুষের ভোটের অধিকার নষ্ট করেছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম শেষে আমরা ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছি। ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরম্ন করেছি। বাঙালি জাতিকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করছি’। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার কিছু করছে না- এটি ঠিক নয় উলেস্ন্লখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা পদড়্গেপ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর ড়্গমতা বলে কুইক রেন্টালে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ব্যাপক দলীয়করণের কারণে প্রশাসনের কোথায়ও সুষ্ঠুভাবে কাজ করা যাচ্ছে না, সর্বত্রই নানা ধরনের বিঘ্ন ঘটানো হচ্ছে। ‘এবারের রমজানে প্রতিটি জিনিসের দাম স্থিতিশীল এবং মানুষের ক্রয় ড়্গমতার মধ্যে রয়েছে এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আছে’ উলেস্ন্লখ করে তিনি বলেন, ‘যখনই কোন ঘটনা ঘটছে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি’। মার্কিন ফেডারেল কোর্টে বেগম খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের নামে ঘুষের মামলা হয়েছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আর এক মিত্র জামায়াত নেতা গোলাম আযমের পুত্র লন্ডনে অর্থ জালিয়াতি করেছেন বলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, জিয়াউর রহমান হত্যার পর ভাঙ্গা স্যুটকেস ও ছেঁড়া গেঞ্জি প্রদর্শনের পর কোন জাদু বলে তার ছেলে তারেক ও কোকো শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন দেশবাসী তা জানতে চায়। বিরোধী দলীয় নেত্রী তাঁর অসুস্থ দুই ছেলেকে দেখতে না যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন মা আছেন যিনি তার অসুস্থ ছেলেকে না দেখে থাকতে পারেন? তিনি বলেন, মা হয়ে যদি অসুস্থ ছেলেদের পাশে দাঁড়াবার অনুভূতি না থাকে তাহলে তিনি দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবেন কিভাবে? প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এরশাদকে স্বামীর হত্যাকারী বললেও তার হাত থেকে বাড়ি গ্রহণ করেছেন। দুইবার ড়্গমতায় থাকলেও জিয়াউর রহমান হত্যার বিচার করেননি। শেখ হাসিনা বলেন, যিনি স্বামীর হত্যার বিচার করেন না, সম্পদ বাড়ানোয় ব্যসত্ম এবং অসুস্থ ছেলেদের দেখতে যান না তার পড়্গে জন্ম তারিখ পাল্টিয়ে নকল জন্মদিন পালন করা সম্ভব। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কৃত এবং পুনর্বাসন করে প্রমাণ করেছেন তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন যে আদর্শের জন্য লড়াই করে গেছেন- জীবন দিয়েছেন সেই আদর্শ বাসত্মবায়নের জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ড়্গুধা এবং দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করতে চাই।’
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
মঞ্চে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরম্নল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। সভা শুরম্নর আগে পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

No comments:

Post a Comment