Saturday, July 17, 2010

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনমত গড়ে তুলতে বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশের আয়োজন করবে আওয়ামী লীগ
১৮ জুলাই ২০১০

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনমত গড়ে তুলতে বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশের আয়োজন করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্য জেলা এবং উপজেলায়ও সমাবেশ আয়োজন করা হবে। শুক্রবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একটি নৈতিক ইস্যু। ইতিমধ্যে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পড়্গে জনমত সংগঠিত করতে এবং বিচার নিয়ে সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মহাজোটকে আরো শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ করবে। রোজার পরেই এ সমাবেশ আয়োজন করা হবে । বিভাগীয় মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি থাকবেন বলে তিনি জানান। কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দেশে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস ও ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের স্মরণে দিবসের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় বলে জানান। সৈয়দ আশরাফ জানান, পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাসত্মবায়নের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী সংসদের সভায় আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, হাইকোর্টের রায়ের কারণে সংবিধান সংশোধনের যে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে তা পর্যালোচনা করতে শিগগিরই একটি সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠন করা হবে। আইনী বাধ্যবাধকতার কারণে ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া নিয়ে কিভাবে, কোন্‌ প্রক্রিয়ায় পুনর্বহাল (রি-ইনস্টেট) হবে এই কমিটিই তা ঠিক করবে বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ জানান, সর্বদলীয় কমিটিতে মহাজোটের নয়, বরং সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি থাকবেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আগামী কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তৃণমূল পর্যায় থেকে যাচাই বাছাই কমিটি গঠন চূড়ানত্ম করা হবে। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে সম্মেলন হবে। এতে দুই বছর সময় লাগবে। এবার তৃণমূল থেকে ৩ জন নেতার নাম পাঠানো হবে। মনোনয়ন বোর্ড এর মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করবে। এ কারণে তৃণমূলের গুরুত্ব আরো বেশি। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সকল রাজনৈতিক সংগঠনকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশা করি বিরোধী দলীয় নেত্রী এই অনুষ্ঠানে আসবেন।

১৭ জুলাই ২০১০

১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে সরকার এবার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। বহুল আলোচিত ৫ম সংশোধনী বাতিল সংক্রানত্ম হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন করতে আগামী দু'-তিন দিনের মধ্যে সংসদে সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি সাংবিধানিক কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, "৫ম সংশোধনী বাতিল সংক্রানত্ম হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতেই হবে। আদালতের ৫ম সংশোধনী বাতিল সংক্রানত্ম রায় বাসত্মবায়নে দু'-চার দিনের মধ্যে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করব।" শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং দেশের সকল জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। সংসদে তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি আসনে বিজয় নিয়ে ৰমতায় আসার ১৭ মাস পর এটিই হবে মহাজোট সরকারের আমলে প্রথম সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে আরও বলেন, '৭৫ সালের পর মিলিটারি ডিক্টেটররা অবৈধভাবে ৰমতায় এসে তা পাকাপোক্ত করতে সংবিধানকে ৰতবিৰত করেছে। সংবিধানের মূল চেতনাকেই ধ্বংস করেছে। ৫ম সংশোধনী বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টও রায় দিয়ে বলেছে যে, জেনারেল জিয়ার ৰমতা দখল ছিল সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ। তাই ৰতবিৰত সংবিধানকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং আদালতের নির্দেশ বাসত্মবায়নে আমাদের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদের ৩৪৫টি আসনের মধ্যে মহাজোটই ৩০৫টি আসন পেয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছে ২৭১টি আসন। জনগণ আমাদের ওপর আস্থা-বিশ্বাস রেখে এই বিশাল ম্যান্ডেট দিয়েছে। তাদের এই আস্থার মর্যাদা আমাদের রৰা করতেই হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সংসদের চলতি অধিবেশনেই অর্থাৎ আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই সংবিধান সংশোধন করতে একটি কমিটি গঠন করে দেব। হাইকোর্টের রায়ের আলোকে আলাপ-আলোচনা করে এই সংশোধনীর বিষয়টি ঠিক করবে। সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালের এই দিনে তাঁকে গ্রেফতারের বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, কোন ধরনের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই এদিন তাঁকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরে চলে একের পর এক নির্যাতন, হয়রানি। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তা দ্রম্নতভাবে পরিচালনা করে চেষ্টা চালানো হয় আমাকে সাজা দিতে, যাতে রাজনীতি করতে না পারি। তিনি বলেন, গ্রেফতারের আগেও তৎকালীন সরকার আমাকে দেশে আসতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু জাতীয় ও আনত্মর্জাতিক প্রবল চাপ এবং দলের নেতাকমর্ীদের অদম্য সাহসিকতার কারণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে তারা বাধ্য হয়। শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি করতে হলে গ্রেফতার, নির্যাতন-হয়রানির শিকার হতেই হবে। আমি কোন সময় মনোবল হারাইনি। যখনই সুযোগ পেয়েছি, তখনই নির্বাচন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছি। বন্দী থাকাকালীন তাঁর মুক্তির জন্য তৃণমূল নেতাদের ইস্পাত কঠিন ঐক্য, দৃঢ় অবস্থান এবং ঢাকায় মাত্র ১৫ দিনে ২৫ লাখ মানুষের গণস্বাৰর সংগ্রহের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, 'আপনাদের এই সাহসী ভূমিকার কারণেই আমি মুক্তি পেয়েছি, নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে ৰমতায় আসতে পেরেছি।

১৫, জুলাই,২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, লেখাপড়ার মান উন্নয়নে তার সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। এবারের বাজেটে শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় তার কার্যালয়ে বসে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ অডিটরিয়ামে জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুনের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সিলেটে অপর একটি কলেজের সাথেও কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষকদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না। আর ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য তা বাস্তবায়নে একটি সুশিক্ষিত জাতি দরকার। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের আরো মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আগামী দিনে দেশের কাণ্ডারি। তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। যারা ভাল ফল করনি তাদের হতাশ হলে চলবে না। পরীক্ষা শেষে মাত্র ৫৭ দিনের মধ্যে ফল ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন।


No comments:

Post a Comment