Sunday, July 11, 2010

১৭ মে ,২০১০

আজ ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। ঐ সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের নির্মমতার হাত থেকে রেহাই পান। ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫, ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে বিপুল আনন্দ-উল্লাস, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস-বায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হৃত গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার বজ্র শপথ নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৭ মে ১৯৮১ সাল। সারাদেশের গ্রাম-গঞ্জ-শহর-নগর-বন্দর হতে লক্ষ লক্ষ অধিকার বঞ্চিত মুক্তি পাগল জনতা ছুটে এসেছিল রাজধানী ঢাকায়। স্বাধীনতার অমর স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছিল ঢাকার আকাশ বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম-পিতৃ হত্যার বদলা নেব’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছিল আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি রাজধানী শহর ঢাকা। বস্তুতঃ ১৭ মে ১৯৮১ পুণর্বার প্রমানিত হয়েছিল, ‘মুজিব বাংলার বাংলা মুজিবের’। লক্ষ লক্ষ জনতার প্রাণঢালা উষ্ণ সম্ভাষণ এবং গোটা জাতির স্নেহাশীষ ও ভালবাসার ডালা মাথায় নিয়ে প্রিয় স্বদেশ ভূমিতে ফিরে এসেছিলেন জনতার আশির্বাদ-ধন্যা নেত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সভাপতি শেখ হাসিনা। সেদিন গগন বিদারী মেঘ গর্জন, ঝাঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল, আর অবিরাম মুষল ধারে বারি-বরষনে যেন ধূয়ে-মুছে যাচ্ছিল বাংলার মাটিতে পিতৃ হত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন। ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দাশ্রুতে অবগাহন করে শেরে বাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি; বঙ্গবন্ধরু নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’ ‘আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই। আওয়ামী লীগ সভাপতিরূপে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলে দেশে গণ-জাগরণের ঢেউ জাগল, গুণগত পরিবর্তন সূচিত হলো আন্দোলনের, সংগঠনের সাথে নতুন করে গণসম্পৃক্ততা সৃষ্টি হলো ব্যাপকভাবে। দেশবাসী নতুন আলোর দিশা পেল। সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মতৎপরতা, স্বৈরাচার বিরোধী মুক্তি আন্দোলন এবং গণমানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রামী ইতিহাসের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি নিরলসভাবে দেশের অধিকারহারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরবচ্ছিন্ন লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। এদেশের অধিকারহারা মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করার অপরাধে তাঁকে বারবার ঘাতকদের হামলার শিকার ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। জনগণের ভালবাসায় অভিষিক্ত হয়ে দ্বিতীয়বারের ন্যায় রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণী ও পেশার জনগণের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। দীর্ঘদিনের অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসন কবলিত জীর্ণ বাংলাদেশকে তিনি একটি উন্নত আধুনিক অসামপ্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার সংগ্রামে নিয়োজিত রয়েছেন।


No comments:

Post a Comment