Sunday, July 11, 2010


৩০ জুন ২০১০

বর্তমান সরকারের প্রথম ১৭ মাসে ১ লাখ ৫ হাজার ৪শ ৪৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার রেমিটেন্স এসেছে। বুধবার সংসদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো: তাজুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান সরকারের প্রথম ১৭ মাসে (২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১০ সালের মে মাস পর্যন্ত) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে গেছেন ৬ লাখ ৪১ হাজার ৬শ ৭৫ জন বাংলাদেশী শ্রমিক। এছাড়া লিবিয়া, ইরাক, সাউথ আফ্রিকা, আফগানিস্তান, কঙ্গো, আজারবাইজান, এঙ্গোলা, সিসিলি ও পাপুয়া নিউ গিণিতে জনশক্তি পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি। বেগম মেহের আফরোজের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সন্ত্রাসীদের হাতে মোট ১৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঐ আমলে পুলিশী হয়রানি, গ্রেফতার-নির্যাতনসহ ৩শ ৮৪ টি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।




৩০ জুন, ২০১০

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলকে সংসদে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘হরতালসহ নৈরাজ্যকর ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে সংসদে আসুন। যা কিছু বলার সংসদে এসে বলুন। হতাশার কথা না বলে আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ বাজেট বাসত্মবায়ন করি। ইনশালস্নাহ আমরা এ বাজেট বাসত্মবায়ন করে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে গড়ে তুলবো।’ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রসত্মাবিত বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। সংসদে না এসে বাইরে হরতাল দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি এখন লুটপাট না করার ব্যথায় ব্যথিত। দেশে এমন কোন ইস্যু ছিল না যে হরতাল ডেকে মানুষের জীবনে দুর্ভোগ ডেকে আনতে হবে। বিদ্যুৎসহ অন্য সঙ্কটের কথা উলেস্নখ করে তিনি বলেন, যে সমস্যা তাদেরই (বিএনপি) সৃষ্টি, তা নিয়ে এখন আন্দোলনের নামে মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে কেন? তিনি বলেন, হরতালের নামে দু’জন নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সরকারি একজন প্রকৌশলীকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয়া হয়েছে, হাসপাতালে ঢুকে রোগীদের নির্যাতন ও অপারেশন থিয়েটার পর্যনত্ম ভাংচুর করা হয়েছে। আক্রানত্মরা এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, এ ধরনের বর্বরতা কেন? এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরাও হরতাল ডেকেছিলাম। তবে তা ছিল দুর্নীতি, লুটপাট, দেশের অর্থ পাচার, জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র হরণ ও সংবিধান লংঘনের বিরম্নদ্ধে। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ড়্গমতায় এসে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর যে বীভৎস অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, আমরা ড়্গমতায় এসে তার কিছুই করিনি। সংসদে ৩৪৫টি আসনের মধ্যে মহাজোটেরই রয়েছে ৩০৫টি। এতো বিশাল বিজয়ের পরেও আমরা কোথাও সামান্যতম বিজয় মিছিল করেনি। বরং নির্বাচনের বিজয়ের পরই দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী সরকারি কর্মকর্তাদের ফাইলে সই না করার হুমকি দিচ্ছেন। তাহলে উন্নয়ন হবে কীভাবে। বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করবো কীভাবে? আসলে বিরোধী দলীয় নেত্রী চান না এসব সঙ্কটের সমাধান হোক, জনগণের দুর্ভোগ কমে যাক। তিনি সমস্যা জিইয়ে রেখে রাজনীতি করতে চান বলেও অভিযোগ করেন তিনি।




২৯ জুন, ২০১০

গত ২৭ জুন হরতালের দিন আহত পিডব্লিউডির প্রকৌশলী আবুল কাসেমের খোঁজ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর স্কোয়ার হাসপাতালে যান। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে আসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন আবুল কাসেমের শয্যাপাশে প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ অবস্থান করেন এবং চিকিৎসকদের কাছে আহতের অবস্থা জানতে চান। চিকিৎসরা জানান, প্রকৌশলী আবুল কাসেম মস্তিস্কে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তবে প্রাথমিক অবস্থাতেই আঘাতের স্থান ও মাত্রা চিহ্নিত করতে পারায় চিকিৎসা ভালোভাবে এগুচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবুল কাসেমকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অনুরোধ জানান এছাড়া চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদসদের সরকারের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক ছাড়াও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও পূর্ত প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।




২৭ জুন,২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সেতু ও কালভার্টের ব্যবস্থা রেখে রাস্তাঘাটের নকশা তৈরি করার জন্য সংশ্ল্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল ডেমরা-তারাবো ফেরিঘাট পয়েন্টে শীতলড়্গ্যা নদীর ওপর নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত সুলতানা কামাল সেতুর উদ্বোধনকালে তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ বন্যাপ্রবণ দেশএ কথা মাথায় রেখেই আপনাদের রাস্তাঘাটের নকশা তৈরি করতে হবে, যাতে করে খাল-বিল ও নদী-নালা দিয়ে দ্রম্নত পানি নেমে যেতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী যথাসময়ে নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষে অবকাঠামো নির্মাণসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রগতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার জন্যও সংশ্ল্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। জামালপুর ও নেত্রকোনার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় ঠিকাদার কাজ না করেই টাকা নিয়ে চলে যান। এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য তিনি সকলকে সজাগ থাকতে বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘কার্যাদেশ দেয়াটাই চূড়ান্ত নয়, দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে ব্রিজ সড়ক নির্মাণের সময় অবশ্যই বর্ষাকালকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সড়ক নির্মাণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকে। পানি নিষ্কাশনের জন্য তিনি সড়ক নির্মাণের সময় বেশি করে ব্রিজ কালভার্ট রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বর্ষাকালে আমাদের নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। ফলে ব্রিজের নিচ দিয়ে নৌচলাচল ব্যাহত হয়।




২৪ জুন, ২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞানীদের প্রতি পাটের জন্মরহস্য আবিষ্কারকে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগানোর আহবান জানিয়েছেন। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং ড. মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে পাটের জীবন রহস্য উদ্ভাবন সংশ্লিষ্ট একদল বিজ্ঞানী তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করলে তিনি এই আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী গবেষণার জন্য তাঁর সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ফলাফল না আসা পর্যন্ত গবেষকরা যাতে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন সে জন্য তাদের চাকরির মেয়াদ ও বেতনসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ও বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একজন গবেষক তার গবেষণা শেষ করার আগেই মাঝপথে অবসরে চলে গেলে কোন ফল পাওয়া যাবে না। গবেষকদের কোন সময়সীমা বা অর্থের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী পাটের জন্মরহস্য উদ্ভাবনকে গৌরবময় আবিষ্কার হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এই আবিষ্কারের ফলে পাট তার সোনালী আঁশের গৌরব ফিরে পাবে। তিনি পাটের জন্মরহস্য উদ্ভাবক বিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের এই আবিষ্কার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। শেখ হাসিনা বলেন, এক সময়ে দেশের একমাত্র বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সোনালী আঁশ তার গৌরব প্রায় হারিয়ে ফেলেছিল। এই আবিষ্কারের ফলে সোনালী আঁশ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন। গবেষণার প্রতি অতীতের সরকারগুলোর অবহেলার কথা উল্লে¬খ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন দেখতে পাই গবেষণার জন্য কোন বরাদ্দ নেই। বিষয়টি আমাকে বিস্মিত করে। ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে পুনরায় গবেষণার কাজ শুরু করা হয়।’ তিনি পাটের বহুমুখী ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘আমাদের বিগত সরকারের আমলে পাটের ১১টি আইটেম ঠিক করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সরকার তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি।’ তিনি বলেন, পাটের জন্ম রহস্য আবিষ্কার পাটের বহুমুখী ব্যবহার এবং নতুন বাজার সৃষ্টিতে চমৎকার সুযোগ এনে দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, পাটের চেয়ে পরিবেশবান্ধব আর কিছু হতে পারে না। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবের সৃষ্টি হয়েছে। পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি করে আমরা পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবেলা করতে পারি। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অফিস-আদালতে পর্দাসহ পাটের তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ’৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো পাটের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। তিনি পাটের জন্মরহস্য আবিষ্কারের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার আহবান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের পাটের জন্মরহস্য আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। এরপর তা দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে আলোচিত হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের এই সফলতার কথা ফলাও করে প্রচারিত হয়। এতে এই আবিষ্কারকে যুগান্তকারী বলে আখ্যায়িত করে পরিবেশবান্ধব পাটের অপার সম্ভাবনার কথা বলা হয়।



No comments:

Post a Comment