Sunday, July 11, 2010


২৬ মে, ২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যত দ্রুত সম্ভব সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশকে দারিদ্রের অভিশাপ থেকে মুক্ত করায় তাঁর সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীসরকারের খাদ্য নীতি বাস্তবায়নে বিপুল পরিমান বিনিয়োগ এবং সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এ লক্ষ বাস্তবায়নে বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আজ সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ নিরাপত্তা বিনিয়োগ ফোরাম-এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তুলে দারিদ্র্য বিমোচনে তাঁর সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনরুল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত এবং দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক ও খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাঁর সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির উল্লেখ করে বলেন, কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি অর্জন দারিদ্র বিমোচনের সর্বোত্তম পথ। তাই সরকার কৃষি উপাদন বাড়াতে কৃষি খাতে বর্ধিত হারে ভর্তুকি প্রদান ও কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করাসহ বিভিন্ন কৃষকবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, কেবলমাত্র খাদ্য উৎপাদনই খাদ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিতে পারে। এ জন্য জনগণের খাদ্য ক্রয়ের ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রয়োনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে সরকার ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৭-২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতি সারা বিশ্বকে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য করেছে। এ সংকট থেকে বিশেষভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রয়োজনের সময় আন্তর্জাতিক বাজার কোন নির্ভরযোগ্য উৎস নয়। পাশাপাশি আমাদেরকে খাদ্য উৎপাদনের সকল সুযোগের সদ্ব্যবহারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। এই সংকট বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীলতা ও খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের নীতি গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমাদের দল যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তখন ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসর্ম্পূতা অর্জন করে। এর ফলশ্রুতিতে আমরা জাতিসংঘের কৃষি সংস্থার মর্যাদাপূর্ণ সেরেস পুরস্কার অর্জন করি। এবারও জনগণের ভোটে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েই আমরা অভ্যন্তরীণ কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’ শেখ হাসিনা বলেন,‘আমাদের দেশের জনসংখ্যা প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ করে বাড়ছে। অন্যদিকে আবাদযোগ্য জমি এক শতাংশ হারে কমছে। এ অবস্থায় ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের ব্যবস্থা করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য উচ্চ উৎপাদনশীল দেশের মতো বাংলাদেশেরও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে। ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যা অতি প্রয়োজনীয়। মৎস্য ও গবাদিপশুর উৎপাদনশীলতা ক্ষেত্রেও আমরা এ কথা বলতে পারি। আমাদের সামর্থ্য আছে। আমাদের যা দরকার তা হল লক্ষ্য পূরণের পথে বিদ্যমান বাধাগুলে দূর করার উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে আরও দুরূহ করে তুলবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, যদিও এতে এর অবদান অতি সামান্যই।




২৬ মে, ২০১০

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সভা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ সরকারের কর্মকান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সরকারকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বিশেষ করে জঙ্গি মোকাবেলায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকর হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সভায় উপদেষ্টা পরিষদকে আরো সম্প্রসারণের তাগিদ দেন উপদেষ্টারা ও উপদেষ্টা পরিষদকে পূর্ণাঙ্গ করার দাবি জানান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলন করার জন্য উপদেষ্টারা তাগিদ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠনেরও আহ্বান জানান তারা। তিনি বলেন, উপদেষ্টারা স্কুল-কলেজের এমপিও তালিকা ঘোষণা করার দাবি করেন। কেউ তালিকা থেকে বাদ পড়লে পরবর্তীতে তাদের নাম ঘোষণার কথাও বলেন তারা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন দ্রুত পাসের দাবি জানান তারা। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, উপদেষ্টারা স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার মাধ্যমে মহাজোটকে আরো শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন। শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো রয়েছে মনে করেন তারা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের উত্থাপিত পরামর্শের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।




২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট বিপুল বিজয় অর্জন করে। ৬ জানুয়ারি ২০০৯ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত মহাজোট সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। ইতোমধ্যে সরকারের ১৬ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এই ষোল মাসে নানা ষড়যন্ত্র, অন্তর্ঘাত ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। প্রধান প্রধান অর্জনগুলো এখানে তুলে ধরা হলো :

১। আইন ও মানবাধিকার :

• জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পাদন। বিশ্বের বুকে মানবাধিকারের এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল জাতি হিসেবে বাঙালীর পরিচয়কে সুপ্রতিষ্ঠিত করা।

• ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা। •

পিলখানায় সেনাকর্মকর্তাদের হত্যার বিচার আরম্ভ করা এবং ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মেয়াদে বিদ্রোহীদের শাস্তি প্রদান।

২। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা :

• ২৫ মে ২০০৯ তারিখে ‌‌আইলার মত বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সরকার সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেছে। সংঘটিত ক্ষয়ক্ষতি কোনরকম বৈদেশিক সাহায্য ছাড়াই প্রাথমিকভাবে মোকাবেলা করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণমূলক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ পূর্ণোদ্যমে এগিয়ে চলছে এবং স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসছে দেশের ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত উপকূলীয় জনগোষ্ঠী।

৩। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালীকরণ :

• বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

• জাতীয় সংসদকে শক্তিশালী করে সংসদীয় কমিটিগুলোর মাধ্যমে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

• উপজেলা পরিষদ গঠন করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের পরিচালনা ও উপন্নয়ন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়েছে।

৪। সামষ্টিক অর্থনীতি ও আর্থিক খাতে সাফল্য :

• মূল্যস্ফীতি হ্রাস : কার্যকরভাবে মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাস করতে সরকার সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে অক্ষুন্ন রাখায় প্রয়াসী হয়েছে। ফলে, পণ্যমূল্যের সহনীয় পরিসি'তি বিরাজ করছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ১০.৮২ এবং ১০.১১ শতাংশ। আর ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির হার হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৩.৪৬ এবং ৪.৬৯ শতাংশ।

• রেমিটেন্স বৃদ্ধি : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশের রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ, রেমিটেন্স প্রবাহ ও বৈদেশিক সহায়তায় নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হলেও, বাংলাদেশে ২০০৭-০৮ এর তুলনায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ ২২.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রেমিটেন্স প্রবাহের উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নভেম্বরের শুরুতে প্রথমবারের মতো ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে, বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো মাত্র ৪৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

• Balance of Payment : অর্থনৈতিক কাঠামোতে একটি দেশের জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেই ব্যালেন্স অব পেমেন্ট বর্তমান সরকার দায়িত্বভার গ্রহণের পর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৩৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা সরকার গঠনের পূর্বে ছিলো মাত্র ৪১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

• বিশেষ প্রণোদনা : দ্রব্যমূল্য ও বিশ্বমন্দার অভিঘাত থেকে দেশের অর্থনীতি রক্ষা করার জন্য ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে ৩ হাজার ৪২৪ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে প্রণোদনার জন্য ৫ হাজার ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।

• রপ্তানি আয় বৃদ্ধি : বিশ্বব্যাপী মন্দা সত্ত্বেও ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে মোট রপ্তানির পরিমাণ ১৫.৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়, যা পূর্ববতী অর্থ বছরের তুলনায় ১০.৩১% বেশি। চলতি অর্থ বছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইউএস ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস (Goldman Sachs) এর গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বমন্দার প্রভাব কাটিয়ে যে অল্প কয়েকটি দেশ উন্নত বিশ্বের চেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ তার অন্যতম। একুশ শতকের লীডিং ইকোনমি হিসেবে ব্রাজিল, রাশিয়া, চীন এবং ভারতসহ মোট এগারটি দেশের তালিকায় বাংলাদেশকেও অন-র্ভুক্ত করা হয়েছে।

• অবকাঠামো উন্নয়ন : ইকোনোমিক জোন পলিসি প্রণয়ন, সিলেট, নোয়াখালী ও নরসিংদীতে ইকোনোমিক জোন স্থাপনের সাইট এ্যাসেসমেন্ট সম্পাদন, কুমিল্লা ইপিজেড সমপ্রসারণ ও মেঘনা ইপিজেড প্রতিষ্ঠার ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পাদন, শিল্পখাতের সামগ্রিক অবস্থা জানার জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল সার্ভে পরিচালনা, আইএফসি ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রসেস ম্যাপিং, অন-লাইন রেজিস্ট্রেশন, সেক্টর প্রোফাইল কার্যক্রম ইত্যাদি। ২০০৮-০৯ অর্থ বছর পর্যন- ইপিজেডে প্রকৃত বিনিয়োগ ছিল ১৫৮২.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা পূর্ববর্তী বছর পর্যন- প্রকৃত বিনিয়োগের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে প্রকৃত বিনিয়োগ হয়েছে ৭৯.১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে বেপজায় মোট ৬৫৯. ৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ ব্যয় সম্বলিত ৬০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।




স্বাস্থ্যখাতের ওপর ২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে চিকিৎসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
২৫ মে, ২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসকদের প্রতি পেশা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় আস্থাশীল থেকে বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসাসেবা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘যারা আপনাদের দক্ষ চিকিৎসক হওয়ার ক্ষেত্রে অপরিসীম অবদান রেখেছেন সেইসব দরিদ্র ও সাধারণ মানুষকেকে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে তাদের ঋণ শোধ করা পবিত্র দায়িত্ব।’প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে নগরীর মহাখালীতে একটি নতুন মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে ভাষণকালে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দরিদ্র ও সাধারণ জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাচ্ছে। কারণ সাধারণ জনগণের কল্যাণে কাজ করাই আওয়ামীলীগ সরকারের নীতি। তিনি বলেন, দেশ থেকে সব ধরণের সংক্রামক ব্যাধি নির্মূল এবং ২০২১ সাল নাগাদ গুণগত পুষ্টি চাহিদা পূরণ বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। স্বাস্থ্যখাতের ওপর ২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন বৃহদাংশে নির্ভর করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকদের প্রতি তাদের প্রশাসন পরিচালনায় নিয়ম নীতির প্রতি আরো বেশি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭২ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস (বিসিপিএস) প্রতিষ্ঠা করেন। বিসিপিএসের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দক্ষ ও সুপ্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে ইনস্টিটিউটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতের সার্বিক উন্নয়নে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতির উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।শেখ হাসিনা মাতৃমৃত্যৃ হার হ্রাস, নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ এবং এইচআইভ/এইডস. ম্যালেরিয়া ও যক্ষার মতো ভয়াবহ ব্যাধিসমূহ প্রতিরোধের মাধ্যমে মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।প্রধানমন্ত্রী বিদেশে চিকিৎসক ও নার্স প্রেরণের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস এন্ড সার্জনস’ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন সরকার এ ক্ষেত্রে সকল প্রকার সাহায্য ও সহযোগিতা দেবে।শেখ হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ সাল মেয়াদে দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচির উল্লেখ করে বলেন, এসব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে স্বাস্থ্য খাতের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সম্ভব হতো।



No comments:

Post a Comment