Sunday, July 11, 2010

১১ মে ২০১০

খালেদা জিয়ার অবৈধ আয়কে বৈধ দেখানো এবং ‍‍‘কালো টাকা’‌‌‌‌‌‌‌কে সাদা দেখানোর এক অভিনব তত্ত্ব আবিস্কার করেছেন; বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এবং খালেদা জিয়ার আইনজীবী আহমেদ আজম খান। খোন্দকার দেলোয়ার এবং বেগম জিয়ার আইনজীবী আহমেদ আজম খানের এই অভিনব ও বিস্ময়কর ‌‘তত্ত্বের’ জন্য সম্ভবত ‘অর্থশাস্ত্র’ বা Economic theory-কেই নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। একইসাথে প্রচলিত ধারণা-বাস-বতার বিপরীত মেরুতে গিয়ে সত্য ও মিথ্যার নতুন সংজ্ঞা বাজারজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অপরদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কালো টাকা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আয়করদিয়ে খালেদা জিয়া সাদা করেছেন; এখানে দোষের কি? আইন সবার জন্যই সমান। আমরা তার এই সত্য, সাহসী বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। অতি সমপ্রতিকালে আমরা লক্ষ্য করছি যে, সকালে বিএনপির মহাসচিব সংবাদ সম্মেলন করলে বিকেলে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিবের একটা সমাবেশ করতেই হবে। না হলে খালেদা জিয়ার কাছে কে আবার পিছিয়ে পড়ে! এই দ্বৈরথ যাঁতাকলে পড়ে বিএনপির একশ্রেণীর কর্মীরা অতিষ্ঠ।বিএনপি নেতৃবৃন্দের অনাহুত এই দৌঁড়ঝাপ দেখলে গ্রামবাংলার প্রচলিত ‘নেই কাজ তো খৈ ভাজ’ প্রবাদটির কথাই মনে পড়ে। আমরা স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই বিএনপি’র অসৎ নেতৃত্ব বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দিতে ও বোকা বানাতে এই আহাম্মকি ও আজগুবি তত্ত্ব উপস'াপন করেছেন। অপ্রদর্শিত আয় ও কালো টাকার পার্থক্য আমরা নাকি বুঝতে পারিনি - এই প্রসঙ্গে পরামর্শ দিয়ে বলতে চাই, খালেদা জিয়ার বিশ্বস- মহাসচিব এবং আইনজীবী আগে অর্থনীতির অ, আ, ক, খ জানার চেষ্টা করুন; নিদেনপক্ষে অর্থনীতির অভিধানটা একটু খুলে দেখুন। অতঃপর অপরের নিকট পণ্ডিতি এবং জ্ঞান বিতরণ করতে আসুন। অর্থনীতির তত্ত্ব এবং দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাগজে-কলমে প্রদর্শিত করা হয়নি এবং রাষ্ট্রের প্রাপ্য ‘কর’ প্রদান করা হয়নি- এমন যে কোনো আয় (বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বার্ষিক দেড় লক্ষ টাকার ওপর) অর্থাৎ অপ্রদর্শিত আয়-ই কালো টাকা। উৎস যাই হোক আইন অনুযায়ী কালো টাকা বৈধ আয় নয়। ঘুষ, দুর্নীতি, কালোবাজারি, অবৈধ কমিশন, রাষ্ট্রীয় তহবিল তসরূপ বা রাষ্ট্রীয় অর্থ সম্পদ অপচয় বা ভোগ দখলের মাধ্যমে যেমন কেউ কালো টাকার মালিক হতে পারে। আবার আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকেও ‘কালো টাকা’ করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ব্যক্তিগত আয়কর ঠিকমতো পরিশোধ না করলে অর্জিত আয় বা ধন-সম্পদ অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। বৈধ ব্যবসার নামেও কেউ আমদানি-রফতানি খাতে আন্ডার ইনভয়েজ/ওভার ইনভয়েজ করে অপ্রদর্শিত বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হতে পারেন। ব্যবসাটি আইন সঙ্গত হলেও তার কর্মকাণ্ডটি যখন বেআইনি হয়, তখনই একে কালো অর্থনীতি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।


No comments:

Post a Comment