Sunday, July 11, 2010


আওয়ামী লীগকে ধ্বংস ও দল ভাঙার জন্য বিভিন্ন সময়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো সক্রিয় রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
২৪ জুন, ২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস এবং দল ভাঙার জন্য বিভিন্ন সময়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারা শুধু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করছে না, জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলাও তাদের কাজ। গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা ‘শুভ শুভ শুভ দিন, আওয়ামী লীগের জন্মদিন’ বলে স্লোগান দিতে থাকলে হাজারো নেতা-কর্মী করতালি ও হর্ষধ্বনির মধ্যে তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মেলায়। এ সময় বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য অতীতে সংবিধান লংঘন করে মার্শাল ল’ জারি করা হয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সব সময় পরাজিত হয়েছে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের কাজ হলো দেশে জঙ্গি, দুর্নীতিবাজ সৃষ্টি করা এবং দেশকে পরনির্ভর করা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের নিশানা মুছে ফেলার জন্য ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে পঙ্গু করা হয়েছে। সাংবাদিক, শিড়্গক, ব্যবসায়ী নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি ১/১১ এর কথা ভুলে গেছে। মিথ্যা- অপপ্রচার চালিয়ে তারা আওয়ামী লীগের ড়্গতি করতে পারে বলে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের সংগঠন। আওয়ামী লীগের সরকার মানেই জনগণের সেবক। যারা দুর্নীতিবাজ, লুটেরা তারা জনগণের কল্যাণ চায় না। ড়্গমতায় যাওয়ার প্রতিই তাদের নজর থাকে বেশি। তিনি বলেন, ২০০১ সালেই শানিত্মপূর্ণভাবে ড়্গমতা হসত্মানত্মর করেছি। কোন ষড়যন্ত্র করিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রম্নয়ারি কারচুপির মাধ্যমে মানুষের ভোট কেড়ে নেয়া হয়েছিল। মানুষ ওই নির্বাচন মেনে নেয়নি। ভোট চুরির অপরাধে জনগণের চাপের মুখে তারা পদত্যাগে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ ছিল বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণযুগ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় ন্যায়ের পড়্গে জনগণের স্বার্থে কাজ করেছে। জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ে সব সময় সোচ্চার থেকেছি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাকে শক্তি-সাহস যুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মাটির সন্তান। যারা বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেনি তারা বাংলাদেশের মানুষের দরদ বোঝে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংসদের বাইরে বিকল্প বাজেট প্রসত্মাবনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দল হিসাবে তাদের প্রসত্মাবনা সংসদে দিতে পারতেন। তিনি প্রশ্ন করেন, সংসদের বাইরে থেকে কেন? এখন বুঝলেন এত কিছু করতে হবে, ক্ষমতায় থাকতে করলেন না কেন? তিনি বলেন, ক্ষমতায় থেকে লুটপাট, মানুষ হত্যায় এরা বেশি ব্যসত্ম থাকে বলে তিনি অভিযোগ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদল সংসদের বাইরে যে বাজেট প্রসত্মাবনা দিয়েছে তার বেশিরভাগই বিগত আওয়ামী লীগ সরকার (১৯৯৬-২০০১) বাসত্মবায়ন করেছে এবং বর্তমান প্রসত্মাবিত বাজেটেও রয়েছে। বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, এদের জন্ম গণতান্ত্রিকভাবে হয়নি। এরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী। ড়্গমতায় গিয়ে এরা দল গঠন করেছে। তিনি প্রশ্ন করেন, তারা কিভাবে গণতন্ত্র বিশ্বাস করবে? চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কারচুপি হচ্ছে এমন অভিযোগ ছিল বিএনপির। এই নির্বাচনে বিএনপির জয়ের প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কারচুপি করে জিতে আসলেন কিনা? আগামীতে ভোট কারচুপি বন্ধে ভবিষ্যৎ নির্বাচনগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম চালুর ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।




আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে দলটি গণ-মানুষের সংগঠনে পরিণত হয়। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে বিকাশ লাভ করে আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিস্তানি সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন-সঙগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির অন্যতম প্রতিভূ মাটি ও মানুষের দল আওয়ামী লীগের ইতিহাস এদেশের মানুষের সংগ্রামের ইতিহাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দলের ২৪ বছরের আপোষহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, মনসুর আলী ও মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের শ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ গণমানুষের কাছে প্রিয় সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৪৯ সালের এদিনে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত করে স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য। ’৭০-এর নির্বাচনে এ দেশবাসী বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় দেয়। ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণায় সাড়া দিয়ে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়। ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় পাকিস্তানী বর্বর জান্তার নির্মম ও বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। গ্রেফতার করা হয় জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়ারলেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার ’৭১-এর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথ গ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত সফল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে একটি শোষণমুক্ত সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গঠনের সংগ্রামে ব্যস্ত, তখনই ঘাতকরা ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ৩ নভেম্বর কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। নির্যাতন আর নিপীড়নের মাধ্যমে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয় জনগণের সংগঠন আওয়ামী লীগকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে রুখে দাঁড়ায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। জনগণকে সাথে নিয়ে শুরু হয় আরো একবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে আবারো ঘুরে দাঁড়ায় আওয়ামী লীগ। এসময় তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেন। দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে দলটি পুনরায় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। নির্বাচনী ইশতেহারে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ হবে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধশালী দেশ। এই লক্ষ্যে দলের পক্ষ থেকে দিন বদলের সনদ ভিশন-২০২১ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।




২২ জুন ২০১০

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রণীত ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানকে (ড্যাপ) গেজেট করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ঢাকার চারপাশের জলাশয় ও কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে। এ ব্যাপারে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। রাজধানীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ লক্ষ্যে জলাশয় ও কৃষিজমি চিহ্নত করতে গেজেট প্রকাশ করা জরুরী। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। মন্ত্রিসভা বৈঠকে গেজেট প্রকাশের পূর্বে ওয়েবসাইটে এর বিস্তারিত প্রকাশ ও জনমত গড়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়। জনমতে পাওয়া সুপারিশ যাচাইবাছাইয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য সাতটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আওতাধীন মন্ত্রণালয়_ গৃহায়ন ও গণপূর্ত, ভূমি, যোগাযোগ, নৌপরিবহন, স্থানীয় সরকার, পানিসম্পদ ও পরিবেশ । আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প, রাস্তাঘাট, কৃষি, বন্যাপ্রবাহ, প্রাকৃতিক জলাধারা চিহ্নিত করে একটি পরিকল্পিত নগরী গড়ার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সাল থেকে ড্যাপ প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। ড্যাপ ছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ রাইফেলস এ্যাক্টের একটি ধারায় সংশোধন আনার অনুমোদন করা হয়। ধারার পূর্বের নিয়মানুযায়ী বাংলাদেশ রাইফেলসের মহাপরিচালক তার বাহিনীর বিচার কার্যে গঠিত আদালতের চেয়ারম্যান থাকবেন। অবশেষে সকল বাধাবিপত্তি পেরিয়ে রাজধানী ঢাকার পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এই প্ল্যানর আওতায় মহানগরীর আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প, কৃষি ও বন্যাপ্রবাহ এলাকা, রাস্তাঘাট, উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, পার্ক, প্রাকৃতিক জলাধার সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।




২২ জুন, ২০১০

সাউথ এশিয়ান পিপলস ইউনিয়ন এগেইনস্ট ফান্ডামেন্টালিজম এন্ড কম্যুনালিজম নামের আনত্মর্জাতিক সংগঠনটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত উদ্যোগের প্রতি গতকাল সোমবার পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছে। গতকাল সকালে সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ সংহতি প্রকাশ করেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গত রবিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘শান্তি, সুবিচার ও ধর্মনিরপেড়্গ মানবতাবাদ’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। তারা বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখন সময়ের দাবি। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতায় আসা সরকারগুলো নিন্দনীয় ইনডেমনিটি আইন পাস করায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনীদের বিচার করা যায়নি। তিনি বলেন, তার বিগত সরকার এই আইনটি বাতিল করে এবং সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত করতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার স্বচ্ছভাবে এ দেশের মাটিতে হবেই। তিনি বলেন, বিগত সরকারগুলো অধিকাংশ তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করে ফেললেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠানের জন্য পর্যাপ্ত সাড়্গ্য-প্রমাণ সরকারের হাতে রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের রড়্গায় বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার জন্য বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে দোষারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।




২০ জুন,২০১০

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসের জঘন্যতম এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে রাজাকার, আল-বদররা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। শনিবার শাহবাগে পাবলিক লাইব্রেরি সেমিনার হলে নূহ-উল-আলম লেনিন সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়-বাঙালির কলঙ্কমোচন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান কৌঁসুলী এডভোকেট আনিসুল হক ও বইয়ের প্রকাশক বিশ্ব সাহিত্য ভবনের স্বত্বাধিকারী তোফাজ্জল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বইটি বাঙালি জাতির মূল্যবান দলিল। নতুন প্রজন্মের জন্য এ বইটি খুবই উপযোগী। এ বইয়ে রাজনৈতিক পটভূমিও অনত্মর্ভুক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের দিন তিনি লন্ডনে ছিলেন। ১৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে প্রথম লন্ডনে বিড়্গোভ মিছিল বের করা হয়। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার নতুন ধারার রাজনীতি প্রবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছে। অতীত কর্মকাণ্ডের অভ্যাস পরিবর্তন করতে না পারলে দেশে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। জেল হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা হবে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, জেল হত্যার পুন:তদন্ত চলছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরম্ন করার সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছিল তারা পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু হত্যা ও বিচারের রায়ের সামগ্রিক বিষয় এই বইয়ে উঠে এসেছে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি চার নেতার হত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে।


No comments:

Post a Comment