Sunday, July 11, 2010


১৫ জুন, ২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বন্ধুপ্রতীম দু’ দেশের মধ্যে সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের জন্যে মঙ্গল বয়ে আনবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল রাতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর সম্মানে আয়োজিত এক নৈশভোজে বক্তৃতাকালে একথা বলেন। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে আস্থা, সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং দু’ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি। আমরা এক চীন নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ৩৫ বছর আগে যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল সময়ের বিবর্তনে আজ তা সহযোগিতা ও উন্নয়নের অংশীদারিত্বে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬টি মৈত্রী সেতু, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) এবং আরো অনেক স্থাপনা চীনের বন্ধুত্বের নিদর্শন হয়ে আছে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র অনেক বেশি বিস্তৃত বলে তিনি উল্লেখ করেন। কৃষি, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জাতীয় নিরাপত্তা, সংস্কৃতি, পর্যটন এবং বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি আমার চীন সফরের সময় স্বাক্ষরিত ৩টি চুক্তি ও একটি সমঝোতা স্মারকসহ আজকের বৈঠকে যেসব নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে উভয় দেশ লাভবান হবে। এসব উদ্যোগকে বেগবান করার জন্য আমার সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে চাই, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরো সুসংহত করতে চাই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় চীনকে পাশে পাবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।




ভূমিকম্প প্রস্তুতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকার ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে
১৪ জুন,২০১০

বাংলাদেশে সম্ভাব্য ভূমিকম্প মোকাবেলায় ভূমিকম্প প্রস্তুতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকার ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এ লক্ষ্যে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় প্রায় ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স-এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাঈম মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এক লাখ টাকা অনুদান প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ কথা অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে যে কোনো দুর্যোগের সময় উদ্ধার তৎপরতা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আপ্রাণ চেষ্টার জন্য বিশেষ করে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, তাঁর সরকারের দেশের প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন স্থাপনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীকে আরো অবহিত করেন যে, অগ্নিনির্বাপন কর্মীদের জন্য ১৪শ’ অগ্নিনির্বাপন পোশাক সংগ্রহের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।




শিগগিরই ১৩ হাজার ৫০০ কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার নিয়োগ দেয়া হবে
১৪ জুন,২০১০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকারের গণমুখী স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের আওতায় খুব শিগগিরই ১৩ হাজার ৫০০ কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার নিয়োগ দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস-২০১০ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভাষণকালে আরো বলেন, অধিকতর কার্যকরভারে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে শিগগিরই এ নিয়োগ শুরু হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ যৌথভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে দক্ষতার সঙ্গে জরূরী প্রসূতিসেবা প্রদানের জন্য ৭টি বিভাগের ২৭টি স্বাস্থ্যসেবা সম্পকিত প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ভিশন-২০২১’র আলোকে ২০২১ সালের মধ্যে শিশুমৃত্যু হার বর্তমানে হাজারে ৫৪ থেকে ১৫তে এবং মাতৃমৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের প্রসবকালীন অকালমৃত্যু রোধে জরূরী প্রসূতি সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এ লক্ষ্যে নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের উল্লেখ করে বলেন, তাঁর বর্তমান সরকার জরুরি প্রসূতিসেবা কার্যক্রম, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্কিল্ড বার্থ এটেনডেন্ট ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীমসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, এছাড়া ডাক্তার ও নার্স এবং পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকদের প্রসূতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যাতে তারা ভালভাবে তাদের কাজগুলো করতে পারেন। তিনি বলেন, তাঁর ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের সরকারের সময় প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য ১টি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো এবং সে সময় ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক নির্মাণের কাজও সম্পন্ন হয়। কিন্তু ২০০১ সালের পর বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার এসব কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। শেখ হাসিনা বলেন,পুনরায় দায়িত্ব নেয়ার পর তাঁর সরকার আবারো কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালু করেছে। ৪ হাজার ১৫০টি ক্লিনিকের পর বর্তমানে ৯ হাজার ৭২২টি কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এ সব ক্লিনিক কার্যকর করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১০ হাজার কমিউনিটি গ্র“প গঠন করা হয়েছে এবং এরমধ্যে ৯ হাজার গ্র“পের প্রায় ১ লাখ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে গ্রামাঞ্চলের প্রসূতি মায়েরা আরো সহজেই প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারবেন।


No comments:

Post a Comment